Thursday, July 8, 2021

পরীক্ষা যখন জীবন যুদ্ধ // তথ্য সংগ্রহ : মিনহাজউদ্দিন মন্ডল

শিক্ষায় বিহার এগিয়ে চলেছে.......
বিহারের সাসারাম ষ্টেশনে প্রতিদিন প্রায় ১২০০ জন  শিক্ষার্থী, না ট্রেন ধরতে নয়...... সম্পূর্ণ অন্য কারণে...👇👇👇

এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে প্রকাশ.... বিহারের সাসারাম জংশনে প্রতিদিনই বিকেলের দিকে দলে দলে ছাত্রকে দেখা যায় বইখাতা হাতে নিয়ে হাজিরা দিতে....  মূলত ১ ও ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মেই ভিড় জমান তাঁরা... উদ্দেশ্য অতি মহৎ— "লেখাপড়া করা"...... 😊

রোহতাস জেলার দূর প্রান্ত থেকেও এখানে সমবেত হন ছাত্ররা... কারণ, এই দুই প্ল্যাটফর্মে চলে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কোচিং। ‘কুইজ’ নামে এক সংস্থা এই বিচিত্র কোচিংটি চালায়... ২০০২ সালে এই কোচিং গড়ে ওঠে। এবং আজ তার ছাত্র সংখ্যা ১২০০-রও বেশি..‼️

কিন্তু কেন সাসারাম জংশনকেই বেছে নিল পড়ুয়ারা? এর উত্তর খুবই সাধারণ। গোটা জেলায় এই রেল জংশনই একমাত্র জায়গা, যেখানে সারাদিন কারেন্ট যায় না। রোহতাস জেলার অগণিত গ্রাম আজও বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন কিছু সমাজবিরোধীদের কারণে । অন্যত্রও বিদ্যুতের সরবরাহ বেশ গোলমেলে। তাই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কম্পিটিটিভ পরীক্ষার্থীরা সাড়া দিয়েছে ‘কুইজ’-এর আমন্ত্রণ।
কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, অঙ্ক, রিজনিং, ইংরেজি— সব কিছুর পাঠই চলে প্ল্যাটফর্মে বসে..‼️

Monday, July 5, 2021

সম্রাট আকবর এবং বীরবল // তথ্য সংগ্রহ : মিনহাজউদ্দিন মন্ডল

বাদশাহ আকবর একবার  বীরবলকে নিয়ে বেগুন ক্ষেতে গিয়েছিলেন। বেগুন ক্ষেতের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে বাদশাহ বীরবলকে বললেন
বীরবল! বেগুন ক্ষেত বুঝি এতো সুন্দর হয়!! ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বীরবল জবাব দিলো-জ্বী জাঁহাপনা! বেগুনের অনেক উপকারিতা ও আছে । বাদশাহ শুনতে চাইলেন-তাই নাকি, কিছু উপকারিতা খুলে বলো । 

বীরবল জবাব দিলো-জাঁহাপনা!
এটি এমন এক তরকারী যা খেলে দৃষ্টি শক্তি বাড়ে, আশপাশের রাজ্য জয় হয়, স্মরণশক্তি বৃদ্ধি হয়, স্বাস্থ্য ভালো থাকে, শরীর ও মন সুস্থ থাকে, এমন কি স্বর্গবাসীর সর্ব প্রথম খাবার হবে এই বেগুন-ভাজি ৷ বীরবলের কথায় বাদশাহ খুব প্রভাবিত হলেন, এবং ঐ দিন জনমের মতো বেগুন খেলেন । অতিরিক্ত বেগুন খেয়ে সম্রাটের অবস্থা কাহিল ৷

বীরবলকে ডাকা হলো। বাদশাহ তাকে বললেন-তোমার মুখে বেগুনের প্রশংসা শোনে, বেগুন খেয়ে আমার অবস্থা এখন কাহিল ৷

বীরবল এবার বলতে শুরু করলো- জাঁহাপনা! বেগুন! এটা কোন তরকারী হলো। এটার নামইতো বেগুণ, যার কোন গুণ নাই। এটা খেলে মানুষের স্মৃতি শক্তি হ্রাস পায়, দৃষ্টি শক্তি ক্ষীণ হয়। স্বীয় রাজ্য এবং সিংহাসন হারিয়ে ফেলে, এমনকি নরক বাসীর প্রথম ও একমাত্র খাবার হবে বেগুনের ভর্তা, বুঝেন এবার বেগুন কী চীজ!

বাদশাহ অবাক হয়ে বললেন, বীরবল তুমি থামো! তোমার কথা শোনে আমার আর কোন অসুখই নেই, সব শেষ। আগে তুমি বলো গতকাল যে তুমি বেগুনের এতো তারিফ করলে, আজ কেন এতো দুর্নাম করছো?

বীরবল হাসতে হাসতে বললেন- জাঁহাপনা, গতকাল আপনি বলেছেন, ভালো; আমিও যদ্দুর সম্ভব তারিফ করেছি৷ আর আজ আপনি বলেছেন বেগুন খারাপ, তাই আজ এই বেগুনের তারিফ করলে হয় আমার জীবন যাবে, নয়তো চাকুরী ৷ আমি কি আর বেগুনের তারিফ করতে পারি? জাঁহাপনা! আমিতো বেগুনের নুন খাই না যে তার গুণ গাইবো!!! 

সময়টা এখন বীরবলদের ৷ 
পদ, পদবী, পদক এখন আর যোগ্যতার মাপকাঠি নয় ৷ 
যে যত বেশী পদলেহন করতে পারবে তার ততবেশী পদক, পদবী মিলবে।
বীরবলদের জয়-জয়কার সর্বত্র।

বিঃ দ্রঃ কারো নিজ চরিত্রের সাথে মিলে গেলে নিজ গুনে ক্ষমা করবেন।

Saturday, July 3, 2021

বিবেকানন্দের জীবন কাহিনী // তথ্য সংগ্রহ : মিনহাজউদ্দিন মন্ডল

স্বামীজির মহাপ্রয়াণ হয় ৩৯ বছর বয়েসে ১৯০২ সালে । বেলুড় মঠে তখন রাত ৯ টা ১০ মিনিট। তখন বেলুড় মঠে বা তার পার্শ্ববর্তী গ্রামে বিদ‍্যূৎ ছিল না । কিন্তু টেলিফোন ছিল তবুও কোন সংবাদমাধ্যম আসেনি এবং পরের দিন বাঙ্গলাদেশের কোন কাগজেই বিবেকানন্দের মৃত্যূ সংবাদ প্রকাশিত হয়নি,এমন কি  কোন রাষ্ট্রনেতা বা কোন বিখ্যাত বাঙ্গালী কোন শোকজ্ঞাপনও করেননি । 
ভাবতে পারেন ???

স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর স্বল্প জীবনে অপমান, অবহেলা বহু পেয়েছেন,উপেক্ষিত হয়েছেন বার বার। পিতার মৃত্যূর পর স্বজ্ঞাতির সঙ্গে কোর্ট কাছারী করতে হয়েছে তাঁকে ।বহু বার হাজিরা দিয়েছেন কাঠগড়ায় l

 নিদারুণ দরিদ্রের সংসারে সকালে উঠে অফিস পাড়া ঘুরে ঘুরে চাকরির খোঁজে বেরুতেন । দিনের পর দিন মা কে বলতেন মা আজ রাতে বন্ধুর বাড়িতে খেতে যাবো। প্রায় দিন দেখতেন সংসারে চাল,ডাল,নুন ,তেল কিছুই নেই কিন্তু ভাই ও বোন নিয়ে 5 টা পেটের খাবার কি ভাবে জুটবে ? মুদির দোকানে ধার করে মাকে এক- দুই দিনের চাল ডাল দিয়ে ... মা কে বলতেন আমার রান্না কোরো না... মা ! দিন দুই বন্ধুর বাড়িতে নিমন্ত্রণ আছে কিন্তু..কোথায় নিমন্ত্রণ ? .. আনাহার আর অর্ধপেটে থাকতেন তৎ কালীন নরেন্দ্র .........

 ভাবা যায় !!!!!!!

চরম দারিদ্রের মধ্যে সারা জীবনটাই টেনে নিয়ে গেছেন । ২৩ বছর বয়েসে শিক্ষকের চাকরি পেলেন মেট্রোপলিটন স্কূলে । যাঁর প্রতিষ্ঠাতা বিদ্যাসাগর মশাই আর হেডমাস্টার বিদ্যাসাগরের জামাতা । জামাতা পছন্দ করতেন না নরেন্দ্রনাথ দত্তকে .. শ্বশুরকে বলে..." *খারাপ পড়ানোর অপরাধে"* বিদ‍্যালয় থেকে তাড়িয়ে দিলেন বিবেকানন্দকে । অথছ, যাঁর জ্ঞান,বুদ্ধি,ব্যুৎপত্তি তর্কাতীত, অন্তত সেই সময়েও।
 আবার বেকার বিবেকানন্দ। বিদেশেও তাঁর নামে এক বাঙ্গালি গুরু প্রচার করেন .. বিবেকানন্দ বেশ কয়েকটি বৌ ও দশ -বারো ছেলে পুলের পিতা ও এক আস্ত ভন্ড ও জুয়াখোর। ......

দেশে ও বিদেশে অর্ধপেটে বা অভুক্ত থেকেছেন দিন থেকে দিনান্তে.... 

চিঠিতে লিখেছিলেন :- 

"-কতবার দিনের পর দিন অনাহারে কাটিয়েছি । মনে হয়েছে আজই হয়ত মরে যাবো ... জয় ব্রহ্ম বলে উঠে দাঁড়িয়েছি .... বলেছি . ..আমার ভয় নেই,নেই মৃত্যূ, নেই ক্ষুধা, আমি পিপাসা বিহীন । জগতের কি ক্ষমতা আমাকে ধ্বংস করে ?" ...

অসুস্থ বিবেকানন্দ বিশ্ব জয় করে কলকাতায় এলে তাঁর সংবর্ধনা দিতে বা সংবর্ধনা সভা তে আসতে রাজি হয় নি অনেক বিখ্যাত বাঙ্গালী ( নাম গুলি অব্যক্ত রইল) শেষে প্যারিচাঁদ মিত্র রাজি হলেও ... তিনি বলেছিলেন .. ব্রাহ্মণ নয় বিবেকানন্দ । ও কায়েত... তাই সন্ন্যাসী হতে পারে না , আমি ওকে brother বিবেকানন্দ বলে মঞ্চে সম্বোধন করবো । 
১৮৯৮, বিদেশের কাগজে তাঁর বাণী ও ভাষণ পড়ে আমেরিকানরা অভিভূত আর বাঙ্গালীরা !
সেই  বছরই অক্টোবরে অসুস্থ স্বামীজি কলকাতার বিখ্যাত ডক্টর রসিকলাল দত্তকে দেখাতে যান,(চেম্বার- 2 সদর স্ট্রিট। কলকাতা যাদুঘরে পাশের রাস্তা )। রুগী বিবেকানন্দ কে দেখে সেই সময় 40 টাকা ও ঔষুধের জন্যে 10 টাকা মানে আজ ২০২১র হিসাবে প্রায় ১৬০০০ টাকা নিলেন 
বিবিধ রোগে আক্রান্ত বিশ্বজয়ী দরিদ্র সন্ন্যাসীর কাছ থেকে . বেলুড় মঠের জন্যে তোলা অর্থ থেকে স্বামী ব্রহ্মনন্দ এই টাকা বিখ্যাত বাঙ্গালী(?) ডক্টর রসিকলাল কে দিয়েছিলেন। ..

আরও আছে .........!!!

 বিবেকানন্দের মৃত্যূর কোন ফটো নেই । এমনকি বীরপুরুষের কোন ডেথ সার্টিফিকেটও নেই কিন্তু সে সময় বালি - বেলুড় মিউনিসিপালিটি ছিলো। 

 আর এই municipality বেলুড় মঠে প্রমোদ কর বা amusement tax ধার্য করেছিলো ।
বলা হয়েছিল ওটা ছেলে ছোকরাদের আড্ডার ঠেক আর সাধারণ মানুষ বিবেকানন্দকে ব্যঙ্গ করে মঠকে বলতো .. "বিচিত্র আনন্দ" বা "বিবি- কা আনন্দ" । ( মহিলা /বধূ / ... নিয়ে আনন্দ ধাম)। এই ছিলো তৎকালীন মুষ্টিমেয় বাঙ্গালীদের মনোবৃত্তি l 

সাধে কি শেষ সময় বলে গিয়েছিলেন- "একমাত্র আর একজন বিবেকানন্দই বুঝতে পারবে যে, এই বিবেকানন্দ কি করে গেল।"