Monday, July 5, 2021

সম্রাট আকবর এবং বীরবল // তথ্য সংগ্রহ : মিনহাজউদ্দিন মন্ডল

বাদশাহ আকবর একবার  বীরবলকে নিয়ে বেগুন ক্ষেতে গিয়েছিলেন। বেগুন ক্ষেতের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে বাদশাহ বীরবলকে বললেন
বীরবল! বেগুন ক্ষেত বুঝি এতো সুন্দর হয়!! ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বীরবল জবাব দিলো-জ্বী জাঁহাপনা! বেগুনের অনেক উপকারিতা ও আছে । বাদশাহ শুনতে চাইলেন-তাই নাকি, কিছু উপকারিতা খুলে বলো । 

বীরবল জবাব দিলো-জাঁহাপনা!
এটি এমন এক তরকারী যা খেলে দৃষ্টি শক্তি বাড়ে, আশপাশের রাজ্য জয় হয়, স্মরণশক্তি বৃদ্ধি হয়, স্বাস্থ্য ভালো থাকে, শরীর ও মন সুস্থ থাকে, এমন কি স্বর্গবাসীর সর্ব প্রথম খাবার হবে এই বেগুন-ভাজি ৷ বীরবলের কথায় বাদশাহ খুব প্রভাবিত হলেন, এবং ঐ দিন জনমের মতো বেগুন খেলেন । অতিরিক্ত বেগুন খেয়ে সম্রাটের অবস্থা কাহিল ৷

বীরবলকে ডাকা হলো। বাদশাহ তাকে বললেন-তোমার মুখে বেগুনের প্রশংসা শোনে, বেগুন খেয়ে আমার অবস্থা এখন কাহিল ৷

বীরবল এবার বলতে শুরু করলো- জাঁহাপনা! বেগুন! এটা কোন তরকারী হলো। এটার নামইতো বেগুণ, যার কোন গুণ নাই। এটা খেলে মানুষের স্মৃতি শক্তি হ্রাস পায়, দৃষ্টি শক্তি ক্ষীণ হয়। স্বীয় রাজ্য এবং সিংহাসন হারিয়ে ফেলে, এমনকি নরক বাসীর প্রথম ও একমাত্র খাবার হবে বেগুনের ভর্তা, বুঝেন এবার বেগুন কী চীজ!

বাদশাহ অবাক হয়ে বললেন, বীরবল তুমি থামো! তোমার কথা শোনে আমার আর কোন অসুখই নেই, সব শেষ। আগে তুমি বলো গতকাল যে তুমি বেগুনের এতো তারিফ করলে, আজ কেন এতো দুর্নাম করছো?

বীরবল হাসতে হাসতে বললেন- জাঁহাপনা, গতকাল আপনি বলেছেন, ভালো; আমিও যদ্দুর সম্ভব তারিফ করেছি৷ আর আজ আপনি বলেছেন বেগুন খারাপ, তাই আজ এই বেগুনের তারিফ করলে হয় আমার জীবন যাবে, নয়তো চাকুরী ৷ আমি কি আর বেগুনের তারিফ করতে পারি? জাঁহাপনা! আমিতো বেগুনের নুন খাই না যে তার গুণ গাইবো!!! 

সময়টা এখন বীরবলদের ৷ 
পদ, পদবী, পদক এখন আর যোগ্যতার মাপকাঠি নয় ৷ 
যে যত বেশী পদলেহন করতে পারবে তার ততবেশী পদক, পদবী মিলবে।
বীরবলদের জয়-জয়কার সর্বত্র।

বিঃ দ্রঃ কারো নিজ চরিত্রের সাথে মিলে গেলে নিজ গুনে ক্ষমা করবেন।

No comments:

Post a Comment