বন্ধুগন ,
আমরা সকলেই জানি আজকে ১১ই আগস্ট , আজকের দিনেই ক্ষুদিরাম বসু আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন অর্থাৎ তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিলো । তাঁর জীবনীকে মনে রাখা একটা মহৎ কাজ । কারন তাঁর বলিদান তাঁর সাহসিকতা আমাদের জীবনে অনুপ্রেরনা হিসাবে কাজ করবে ।
তাই আর দেরিনা করে ক্ষুদিরাম বসুর আত্মার শান্তি কামনায় এবং তাঁকে আমাদের মনে জাগিয়ে তুলতে আমরা আবার একবার তাঁর জীবনী সম্পর্কে জেনে নিই -------
ক্ষুদিরাম বসুর জীবনী
আমরা আজকে ধাপে ধাপে ক্ষুদিরাম বসুর সম্পর্কে জানবো , অর্থাৎ জন্ম থেকে শুরু করে তাঁর জীবনে কি কি ঘটেছিলো এবং তাঁর কীভাবে মৃত্যু হয়ে ছিলো --
জন্মঃ মেদিনীপুরের কেশপুরের মোহবনী গ্রামে ত্রৈলক্যনাথ বসু ও লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবীর ঘর আলো করে ১৮৮৯ সালে ৩ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন ক্ষুদিরাম বসু।
শিক্ষা জীবন ঃ ক্ষুদিরাম বসু তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু করেন তমলুকের হ্যামিল্টন স্কুলে। পড়ে তিনি মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষালাভ করেন । সেখানে শিক্ষাকতা লাভ করতে করতে তিনি সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সান্নিধ্যলাভ করেন এবং তিনি সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সন্নিকটে এসে তিনি বিপ্লবী চিন্তাধারায় অনুপ্রানিত হন । এই সত্যেন্দ্রনাথ বসুর নিকটে এসে তিনি ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে বিপ্লব করতে অনুপ্রানিত হন ।
প্রাথমিক জীবন ঃ যখন অরবিন্দ ঘোষ এবং সিস্তার-নিবেদিতার মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীরা স্বাধীনতার জন্য জনগনের সামনে বক্তব্য রাখেন এবং বিভিন্ন বিপ্লবি গোষ্ঠী গুলির সঙ্গে গোপনে অধিবেশন করছেন সেই সময় কিশোর ক্ষুদিরাম বসু এই সমস্ত বিপ্লবী আলোচনায় অংশগ্রহন করে চলেছেন । তিনি ১৫ বছর বয়েসে অনুশীলন সমিতির একজন স্বেচ্ছাসেবক হয়ে ওঠেন । ভারতে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে 'সোনার বাংলা' পুস্তটি বিতরনের অপরাধে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় ।
বৈপ্লবিক চিন্তাধারা ঃ ক্ষুদিরাম বসু খুবি অল্প বয়সে বিপ্লবী কাজ কর্মে সবার নজর কেরেছিলেন । মেদিনীপুরের এক কৃষি ও শিল্পমেলায় রাজদ্রোহমূলক ইস্তেহার বণ্টনকালে ক্ষুদিরাম প্রথম পুলিশের হাতে ধরা পরেন । পরে ১৯০৭ সালে হাটগাছায় ডাকের থলি লুট করা এবং ১৯০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর নারায়ণগড় রেল স্টেশনের কাছে বঙ্গের ছোটলাটের বিশেষ রেলগাড়িতে বোমা আক্রমণের ঘটনার সাথে তিনি জড়িত ছিলেন।
কিংসফোর্ড হত্যাকাণ্ড ঃ কলকাতার প্রধান প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড বাঙালিদের অত্যন্ত ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন বঙ্গভঙ্গ বিরোধী ও স্বদেশী আন্দোলনের কর্মীদের প্রয়োজনভিত্তিক কঠোর সাজা ও দমননীতির কারণে । তাই ১৯০৮ সালে কিংসফোর্ড-কে হত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন যুগান্তর বিপ্লবী দল এবং তার দায়িত্ব পরে প্রফুল্ল চাকী এবং ক্ষুদিরাম বসুর উপর। কিংসফোর্ডকে যখন কলকাতা থেকে পদোন্নতি করে সরকার তাকে বিহারের মুজাফ্ফরপুরে জেলার বিচারপতি হিসেবে বদলি করেন। ৩০ এপ্রিল যখন তিনি বদলি হয়ে চলে যাবেন তখন প্রফুল্ল চাকী এবং ক্ষুদিরাম বসু স্থানীয় ইউরোপীয় ক্লাবের গেটের কাছে একটি গাছের আড়ালে অতর্কিত আক্রমণের জন্য ফাঁদ পেতে থাকেন। কিন্তু সেই সময় কিংসফোর্ডের গাড়ির মতো অন্য একটি গাড়িতে ভুলবশত বোমা মারেন । সেই গাড়ির ভেতরে একজন ইংরেজ মহিলা ও তাঁর মেয়ে মারা যান। সেই ঘটনা স্থল থেকে তারা দুজনে পালিয়ে যান । এই মর্মান্তিক ঘটনাটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সমস্ত জায়গায় ছড়িয়ে পরে । এর পর খুব সকাল থেকেই সমস্ত রেলস্টেশনে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল যাতে প্রত্যেক যাত্রীর ওপর নজর রাখা যায়। অন্যদিকে ক্ষুদিরাম পায়ে হেঁটে ওয়াইনি নামে এক স্টেশনে পৌঁছান। সেইখানে দুজন কনস্টেবলের হাতে তিনি চিরকালের জন্য ধরা পরে যান ।
অন্যদিকে প্রফুল্ল চাকী অন্যদিকে কয়েক ঘণ্টা ধরে হেঁটে ছিলেন সেইখানে ত্রিগুণাচরণ ঘোষ তাঁকে শত্রু মনেকরে তাঁর দিকে বোমা নিক্ষেপ করেন , তাঁর ফলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান ।
মৃত্যু ঃ বোমা নিক্ষেপের ফলে দু'জন মহিলার মৃত্যু হয় তার ফলে ১৯০৮ সালের ৩০শে এপ্রিল বিহারের মুজাফ্ফরপুরে তাঁর বিচারকার্য শুরু হয় । বিচারে তাঁর ফাঁসি দেওয়া হয় । মুজফ্ফরপুর কারাগারে ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট ফাঁসিতে তাঁর মৃত্যৃ হয়। যখন তাঁর মৃত্যু হয় তাঁর বয়স ছিলো ১৮ বছর ৮ মাস ৮ দিন ।
আজকে আপনাদের সামনে সংক্ষেপে ক্ষুদিরাম বসুর জীবনী তুলে ধরলাম । আশা করছি তোমাদের পোস্টটি ভালো লেগেছে । যদি কিছু মতামত দেবার থাকে অবশ্যই জানাবেন । ধন্যবাদ , তোমার দিনটি শুভ হোক ।
No comments:
Post a Comment